স্বার্থপর
তিনবছরের সম্পর্কে ইতি টেনেছিলো অনয় আর তার কারণটা আমি নিজেই।
হ্যাঁ কেউ নাকি কোনোদিন আমায় নাকি সুন্দর বলবে না।
আমার গায়ের রংয়ে নাকি কোনো নেশা নেই।আকর্ষন নেই চেহারাতে।তাতেই সব শেষ।
তবে সে নেশা খুঁজে পেয়েছিলো খুব তাড়াতাড়ি তাও আবার প্রিয় বান্ধবী ত্রিধার গায়ের রংয়ে।
আমাদের সম্পর্ক ভাঙার ছয়মাসের মধ্যে তাদের বিয়ে হয়।
পৃথিবীতে আমিই হয়তো একমাত্র মেয়ে যে কি না তার এক্সের বিয়েতে আর প্রিয় বান্ধবীর বিয়েতে একসাথে এটেন্ড করতে পেরেছিলো।
ত্রিধা আমাদের সম্পর্কের আগা গোড়া সবটা জানতো তবুও সে তাদের সম্পর্কে একশো পার্সেন্ট খুশি ছিলো।
মাঝে মাঝে তো আমায় বলতো জানিস অনয় না আমায় এত এত ভালোবাসে যত্ন করে।
আমি নির্বাক ছিলাম কারণ এ গল্প তো আমার ছিলো কিন্তু তবুও ছেড়ে দিয়েছিলাম দুজনকেই।
বিয়ের কার্ডের নিমন্ত্রিতদের লিস্টে আমিই নাকি প্রথমে ছিলাম অবাক যতটা হয়েছি ততটা হয়েছি বিরক্ত।
তবুও ভেঙে পড়েনি।
বাবা মায়ের কথা ভেবে নিজেকে শুধরে নিয়েছি।
বিয়ের পর ত্রিধা যখন তাদের দাম্পত্যের গল্প ফোন করে আমার কাছে সগৌরবে বলতো তখন নিজেকে অসহায় লাগতো।
তবে আমার সে অসহায়ত্ব খুব বেশি দিন টিকেনি বছর খানিকের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় অভ্রর সাথে।
সাত বছরের বড় সে আমার থেকে।
সবসময়ই তার কাছে কেয়ারিং এর তুঙ্গে আমি।
তুমি থেকে তুই এ নামে না।
মুখ ফুটে কখনো ভালোবাসি বলে না তবে নিয়ম করে খোঁপায় বেলী ফুল গুঁজতে দেখেছি প্রায়শই।
সারাদিন বাইরে থাকলেও দিনের শেষে এসে পৃথিবী জয় করা ভালোবাসা আর যত্নে আমাকে আগলে রাখতো।
আর এদিকে অন্য গল্পে ততদিনে নেশা কেটে গেছে। ত্রিধা আর অনয় বিয়ের চারবছর পর মিউচুয়াল ডিভোর্সের পথে পা বাড়িয়েছে।
আমি অভিশাপ দেইনি কারণ কাকে অভিশাপ দিতাম যাকে জীবনের তিনটা বছর উৎসর্গ করেছিলাম নাকি যে বন্ধুত্বের সুযোগে আমাকে প্রতিনিয়ত ক্ষত বিক্ষত করেছে।
তবে ওদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারণ ওরা না থাকলে অভ্রর সন্ধান পেতাম কি না কে জানে।
তবুও তো প্রকৃতি আছে। আমরা ক্ষমা করলে কি হবে প্রকৃতি ছেড়ে দেয় না কোনো স্বার্থপরকে।
Comments
Post a Comment